গত দুই পর্বে আমি মোট পাঁচটি মুভি রিভিউ দিয়েছিলাম দুইটি পর্বে। আজকে আমি আরো কয়েকটি মুভি রিভিউ দিবো যুদ্ধ ও ইতিহাস সম্পর্কে। আজকেই শেষ পর্ব। আশা করি মুভি গুলা দেখবেন সবটাইটেল সহকারে।
১. Michael Collins মুভি রিভিউ
Genre: War,Drama,History
IMDB:7.3
Staring: Liam Nesson
Country: Ireland
Year: 1996
Michael Collins আইরিশ ইতিহাসের এক যুগান্তকারী নাম।।বলা হয় স্যার কলিন্স আইরিশ দের জন্য যতদুর করেছিল আইরিশ বিদ্রোহিদের ইতিহাসে এতদূর কেউ করতে পারেনি,এখানে কলিন্সের ভুমিকায় অভিনয় করেছেন leam nesson। মানতেই হয় যে নেসনের পরিবর্তে অন্য কাউকে এই রোল দেয়া হলে মুভিটা অতটা ফুটে উঠতো কিনা সন্দেহ ছিল। নেসন এখানে একটা অসাধারণ কাজ করেছে। সিনেমার প্লট উনিশ্য শতাব্দীর আইরিশ বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে,তখন আয়ারল্যান্ড শাসন করতো বৃটেন,আইরিশদের তাদের নুন্যতম অধিকার থেকেও বঞ্চিত রাখা হত চলতো অকথ্য নির্যাতন। এরই প্রেক্ষিতে আয়ারল্যান্ডকে স্বাধিনতা এনে দিতে গঠিত হয় Ira (Irish republican army) তাদের মুল লক্ষ্য ছিল চোরাগোপ্তা হামলার মাধ্যমে বৃটিশ পলিটিশিয়ানদের কর্তিত্ব খতম করা ও বৃটিশ সাম্রাজকে এর হাটুতে নিয়ে আসা যাতে ইংলিশরা আয়ারল্যান্ড ছাড়তে বাধ্য হয়। এই Ira এর একজন উর্ধতন কর্মকর্তা ও সৈনিক থাকে লিয়াম নেসন। সিনেমাটিতে যুদ্ধ একশন,রোমান্স সবই আছে। একশনের পাশাপাশি সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল বৃটিশদের নোংরা অথচ ধুর্ত রাজনিতি। যখন শত্রুকে হাতে মারা সম্ভব না তখন ব্রেইনই যথেষ্ট। you can’t satisfy them all! মাত্র এই পাচ লাইনেই ভয়ংকর এক মহাগাথা লুকায়িত। আশাকরি ফিল্মটা সবার ভালো লাগবে।
২. Where eagles dare (1969) মুভি রিভিউ
Imdb:7.4
Genre: War,Drama
পুরাতন কিছু মাস্টারপিস সিনেমা গুলির মধ্যে একটি হল where eagles dare। এটা ওয়ার ফিল্ম। ফিল্মের মুল বেইস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করে। এখানে অভিনয় করেছেন Kellys heroes,Gran Torino,the good bad and ugly খ্যাত বিশ্ববিখ্যাত কালজয়ী অভিনেতা Clint Eastwood । সুধু এ মাসেই ক্লিনট এর বেশ কয়েকটা ফিল্ম দেখা হয়ে গেলো। অভিনেতা হিসেবে তাকে ভালো লাগার মুল যে কারনটা হচ্ছে তা হল তার অভিনয় আর ডায়লগ,এত passion নিয়ে ফিল্ম জগতে কাজ করেছে এমন মানুষ বাস্তবে খুব কম আছে। এখানে Clint eastwood ও তার সংগি ছয় জনকে একটা মিলিটারি অপারেশন দেয়া হয়। অপারেশনটা ছিল খুব কঠিন। জার্মানিতে একটা বেশ বিশাল জার্মান ক্যাম্প ছিলের ক্যাম্পের শেষ মাথায় ছিল একটা বড় সুউচ্চ ক্যাসেল,ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ মুলত এখান থেকেই চালনা করছিল জার্মানি। পাশাপাশি এই ক্যাসেল এ ছিল সব বড় বড় জার্মান অফিসারদের আডডা। তবে প্লেসটা খুব সিকিউর ছিল কথায় বলে এই ক্যাসলে উকি দেয়া ঈগল পাখিরও সাধ্যের বাহিরে সেখানে ছয় জন আমেরিকান ঈগলই বা কি আর কিছু করে দেখাবে? এরকম ভয় ভিতি নিয়েই মার্কিন কর্তৃপক্ষ নিজেদের অপারেশন চালু করে, এই সুর ধরেই ফিল্মের নামকরণ Where eagles dare. ফিল্মের শুরুটা বেশ স্লো মনে হতে পারে তবে অভিনয়ের দক্ষতার কারনে অতটা খারাপ লাগেনি,এর পর ফিল্ম আস্তে আস্তে গতি ধরে একটু লং ফিল্ম হাল্কা বোর ফিল হলে হতেও পারে,এর পর মুল পর্ব শুরু হয় যদিও শুরু থেকেই এম্বুশ ছিল তবে মুল পর্বের এম্বুশ আর নাটকিয়তাই বেশি ভালো লেগেছে। অনেক পুরনো ফিল্ম হলেও VFX and CGI দু টোই দারুন আশাকরি সবার ভালো লাগবে।
৩. Rommel (2013) মুভি রিভিউ
Genre: War,Drama,Biography
PR:8.5
Country: Germany
Language: German
Rommel সে সময়কার জার্মানির সবচেয়ে ক্ষমতাধর,বিজ্ঞ ও বুদ্ধিসম্পন্ন আর্মি জেনারেল ছিল। এই সিনেমাতে এই লিজেন্ড এর কিছু ঝলক দেখানো হয়েছে। সিনেমার প্লট অনেকটা downfall এর মত বায়গ্রাফি ধরনের এখানে যুদ্ধ একটু কম দেখানো হয়েছে তবে পুরা প্লটটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মান সেনানি রমেল ও হিটলারের ইউরোপ যুদ্ধ জয়ের যে কুটকৌশল ছিল সেটাই এখানে মুল। এখানে হিটলার এর হয়ে bruno ganj অভিনয় না করলেও যিনি অভিনয় করেছেন তিনিও কম যায়না। বেশ ভালোই অভিনয় করেছে।
(হাল্কা স্পয়লার)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ জয়ে এলাইড ফর্সের সবচেয়ে বড় ব্রেকথ্রু ছিল ফ্রান্সের নরমেন্দি ওমাহা বিচ। প্রায় অনেক দিন থেকেই গোপনে এখানে নিজেদের সেনাবাহিনী নামানোর ছক কষছিল মার্কনিরা। ওপর দিকে অভিজ্ঞ জার্মান জেনারেল রোমেল এই জিনসটা ঠিকিই আচ করতে পেরেছিল,তাই হিটলারের কাছে অতিরিক্ত সেনা ও আর্টিলারি deployment এর অনুরোধ জানানো হয় কিন্তু বেকে বসে হিটলার। হিটলারের মতে ওমাহা বিচ defence এর জন্য যথেষ্ট আর্মি সেখানে দেয়া হয়েছে তার পরিবর্তে সে western front এর অন্যান টার্গেট পুরনো বেশি মনযোগ দিচ্ছিল। অবশেষে সেই দিন আসে প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার মার্কিন সেনা ভারি অস্ত্র শস্ত্র আর্টিলারি নিয়ে ওমাহা বিচে অবতরণ করে। সে সময় তাদের রুখতে জার্মানদের হাতে সে রকম সেনা বা শক্ত প্রস্তুতি কোনটাই ছিলনা। মাত্র ছয় ঘনটার মধ্যে বিচ সংলগ্ন এলাকার নিয়ন্ত্রন হারায় জার্মানি। হুর হুর করে স্রতের ন্যায় ফ্রান্সে প্রবেশ করে মার্কিন সেনাবাহিনী। এরকমি হাল্কা যুদ্ধ,পলিটিকাল দাঁওপ্যাঁচ আর হিটলারকে হত্যার ষড়যন্ত্র নিয়ে সিনেমাটি। জার্মান সিনেমা গুলা এমনিতেই বেশ ভালো এটাও অসাধারণ ছিল এক কথায় দারুন।
আজকে শেষ পর্বে আরো তিনটি মুভি রিভিউ লিখেছি। আশা করি আপনাদের সবগুলো মুভি রিভিউ ভালো লাগবে।